গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি- বেহাল দুটি সড়ক স্বেচ্ছাশ্রমে সংষ্কারের উদ্যোগ নেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এরমধ্যে একটি কাঁচা সড়কের সংষ্কার কাজ শেষ করতে গিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। এসময় ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত নেতা-কর্মীরা বাড়ি ফেরার ইচ্ছে পোষণ করলে বাধ সাধেন বিএনপি নেতা আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ।
তিনি বলেন, কাজ অর্ধ সমাপ্ত রেখে গেলে জনসাধারণের দুর্ভোগ বাড়বে। এরপর অন্ধকারেই সড়কের কাদা-পানিতে নেমে কাজ শুরু করে দেন তিনি। তাকে দেখে নেতা-কর্মীরাও আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন নি। বাড়ি না ফিরে তারাও যোগ দেন নেতার সাথে সড়কের সংস্কারের কাজে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কের ভাঙ্গা অংশ সংস্কার হয়ে যায়।
এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তার নেতৃত্বেই শনিবার উপজেলার অচিন্তপুর ও সহনাটি ইউনিয়নের দুটি সড়ক নিজস্ব অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কারের করে প্রশংসায় ভাসছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
স্থানীয় ও দলীয়সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের সাদার পাকা সড়ক থেকে পল্টিপাড়া মোড়ল বাড়ি হয়ে সানিয়া পাড়া মতির বাড়ির পর্যন্ত কাঁচা সড়কটি বর্ষাকালে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েন কয়েক গ্রামের মানুষ।
অন্যদিকে, গৌরীপুর-বেখৈরহাটি সড়কের ঘাগলা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনের অংশ পাকা সড়ক ভাঙাচোরা ও বড় গর্ত হয়ে গেছে। বর্ষার বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে মরণফাঁদ তৈরি হয়। প্রায়ই ঘটে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। সড়ক দুটি সংষ্কার করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হয়নি। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ নিজস্ব অর্থায়ন ও স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি দুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সহনাটি ইউনিয়নের পল্টিপাড়া মোড়ল বাড়ি হয়ে সানিয়া পাড়া মতির বাড়ির পর্যন্ত কাঁচা সড়কটি ইটের খোয়া ও সুরকি ফেলে সংস্কার করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
এমসয় ক্লান্ত পরিশ্রান্ত নেতা-কর্মীরা বাড়ি ফেরার ইচ্ছে পোষণ করলে বিএনপি নেতা আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ দলীয় নেতা-কর্মীদের বলেন, অচিন্তপুর ইউনিয়নের ঘাগলা এলাকার সড়কের সংস্কার কাজ ফেলে রেখে গেলে চালক, যাত্রী ও জনসাধারণের দুর্ভোগ বাড়বে। পরে তিনি অন্ধকার রাতে ঘাগলা এসে সড়কের কাজে নেমে পড়লে দলীয় নেতা-কর্মীরাও কাদাপানি নেমে ইটের খোয়া, বালু ও সুরকি ফেলে সড়কের ভাঙাচোরা গর্ত ভরাট করে সড়কটি চলাচল উপযোগী করেন। এদিকে সড়কটি সংষ্কার হওয়ায় অচিন্তপুর ও সহনাটি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মুখে হাসি ফুটে উঠে।
সহনাটি ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন বলেন, সহনাটি ইউনিয়নের এই কাঁচা সড়কটি যোগাযোগ ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত বর্ষায় সড়কের বেহলাদশার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আজকে সড়ক সংস্কার হওয়ায় আমরা খুশি। তবে আমাদের দাবি সড়ক যেন পাকা করে দেয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম আজাদ বলেন, রাজনীতি মানে শুধু মিটিং-মিছিল নয়। ইচ্ছে থাকলে ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে মানুষের মুখে হাসি ফুটানো যায়। তারই যেন এক উদাহরণ হয়ে উঠল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। রাতের অন্ধকারে সড়ক সংস্কার করে তারা প্রশংসায় ভাসছেন। গ্রামবাসীও তাদের কাজে গ্রামের মানুষে মুখে হাসি ফুটেছে।
পৌর বিএনপির সদস্য সচিব সুজিত কুমার দাস বলেন, একটি কাজ শেষ করতে করতেই সন্ধ্যা হয়ে যায়। এ সময় অনেক নেতাকর্মীরা বাড়ি ফিরে যেতে চাইছিল। কিন্তু হিরণ ভাই অর্ধসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে ফিরে যেতে চাইলেন। পরে অন্ধকারেই তিনি কাদাপানিতে নেমে কাজ শুরু করায় দলীয় নেতা-কর্মীরা সবাই একযোগে রাস্তায় নেমে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করায় এলাকাবাসী খুব খুশি হন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ বলেন, অচিন্তপুর ও সহনাটি ইউনিয়নের দুটি সড়ক বেহাল স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করেছি। কাজ শেষ করতে গিয়ে রাত হয়ে গিয়েছিল। কিন্ত আমি যখন কোদাল নিয়ে সড়কে নেমে পড়ি। তখন দলীয় নেতা-কর্মীরা সবাই একযোগ কাজে নেমে পড়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক দুটি চলাচলের উপযোগী হয়েছে। গ্রামবাসীও আমাদের কাজে খুশি হয়েছে। পাশাপাশি সড়কটি দুটি যেত সরকারি উদ্যোগে সংস্কার করা হয় এজন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আমিন পাপ্পা বলেন, স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা সড়ক দুটি সরকারি উদ্যোগে সংস্কার ও পাকাকরণের বিয়ষটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।